নিউজ ডেস্ক
জরিমানা ও সুদ ছাড়াই মার্চ-এপ্রিল মাসের মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) রিটার্ন দাখিল করার সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মঙ্গলবার (২৬ মে) এক বিশেষ আদেশে ৯ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ দিয়েছে সংস্থাটি। করোনা ভাইরাসের এই আপৎকালীন সময়কে বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানানো হয়ে এতে।
এনবিআরের সদস্য (মূসকনীতি) মো. মাসুদ সাদিক স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যেসব প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র মার্চ ও এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করতে পারেনি, সেসব প্রতিষ্ঠানের দাখিলপত্র পেশের সময়সীমা আগামি ৯ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। এর সঙ্গে সুদ ও জরিমানা হতে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
এর আগে গত ২০ মে যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারীর মতো আপৎকালীন নির্ধারিত সময়ের পরেও সুদ ও জরিমানা ছাড়াই ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করার সুযোগ দিয়ে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন সংশোধন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের অনুমতিক্রমে আইন বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশ জারি করে।
অধ্যাদেশে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এর ৬৪ নং ধারার ১ উপধারায় ক ও খ উপধারা সন্নিবেশিত হয়। ক উপ-ধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে ভিন্ন যাহাই কিছু থাকুক না কেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, দৈব-দূর্বিপাক বা যুদ্ধের কারণে জনস্বার্থে বোর্ড ও সরকারের অনুমতিক্রমে বর্ণিত আপৎকালীন সময়ের জন্য সুদ ও জরিমানা আদায় হতে অব্যাহতি প্রদান করে দাখিলপত্র পেশের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে পারবে। আর খ উপধারায় বলছে, ‘উপধারা ১ক এ উল্লেখিত আদেশ ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা প্রদান করা যাবে।
বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের বিধানে বলা আছে, প্রতি মাসের রিটার্ন পরের মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হয়। তা না হলে এককালীন ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও প্রতিদিনের জন্য ২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। এর মধ্যে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম গতিশীল রাখতে এনবিআর মাসিক ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে ভ্যাট সার্কেল অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রেখেছিল। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বেশিরভাগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এ সময়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারেনি।
এরপর বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলে এফবিসিসিআইসহ আরও কিছু সংগঠন জরিমানা ছাড়া রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর আবেদন করে। তারপর আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ মে পর্যন্ত সারা দেশে ভ্যাট রিটার্ন (এপ্রিল মাস) দাখিল হয়েছে ৪২ হাজার ৬০০, যা গত মাসের (মার্চ) চেয়ে প্রায় ১১ হাজার বেশি। এ সময় রাজস্ব আদায় হয়েছে হয়েছে তিন হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা; যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা বেশি।